আমাদের দলের প্রত্যেক সদস্য নিজ নিজ ক্ষেত্রে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ। একসাথে কাজ করে আমরা শুধু প্রতিষ্ঠান নয়, বরং একটি পরিবার গড়ে তুলেছি, যেখানে আস্থা, পরিশ্রম এবং স্বপ্নই আমাদের প্রকৃত শক্তি।
পাবনার কুঠিপাড়ার নিভৃত, অথচ ঐতিহ্যবাহী এক পরিবারে জন্ম তাঁর, অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। এমন এক পরিবার, যার শিকড় গভীরে প্রোথিত মানবিকতা, শিক্ষা ও সমাজসেবার মাটিতে। তাঁর পিতা মরহুম আজিজুল ইসলাম বিশ্বাস ছিলেন এক সৎ, শিক্ষিত ও সমাজনিষ্ঠ মানুষ; দাদা আলহাজ আহেদ আলী বিশ্বাস ছিলেন ব্রিটিশ আমলের প্রখ্যাত ঠিকাদার ও সমাজহিতৈষী, যিনি শুধু কাঠামো নির্মাণে নয়, মানুষের মন গঠনে বিশ্বাস রাখতেন। সেই ঐতিহ্য আজও টিকে আছে, এই পরিবারের রক্তে, চিন্তায়, চরিত্রে।
শৈশবে শিমুল বিশ্বাস বড় হয়েছেন এমন এক পরিবেশে, যেখানে ভালোবাসা ও মানবিকতার শিক্ষা ছিল প্রতিদিনের পাঠ। প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি গোপাল চন্দ্র ইনস্টিটিউট, এডওয়ার্ড কলেজ ও শহীদ বুলবুল কলেজে অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনশাস্ত্রে ডিগ্রি অর্জন করেন। কিন্তু তাঁর শিক্ষা কেবল বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ ছিল না, মানুষকে বোঝা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো, আর সমাজের জন্য কিছু করার ইচ্ছাই ছিল তাঁর সত্যিকারের পাঠশালা।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হন। সাধারণ ছাত্রদের স্বার্থে তাঁর নির্ভীক নেতৃত্ব তাঁকে দ্রুত পরিচিত করে তোলে। শহীদ বুলবুল কলেজে তিনবার ভিপি নির্বাচিত হওয়া ছিল সেই নেতৃত্বেরই প্রতিফলন। তিনি রাজনীতিকে কখনো ক্ষমতার পথ ভাবেননি; ভেবেছেন দায়িত্ব হিসেবে, মানুষের জীবনে আলো আনার এক সংগ্রাম হিসেবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন পাস করে তিনি পাবনা বার অ্যাসোসিয়েশনে যোগ দেন। কিন্তু আইন পেশার গণ্ডির ভেতর তিনি নিজেকে কখনো সীমাবদ্ধ রাখেননি। আইন পেশায় যুক্ত হওয়ার পরও তিনি সেই দায়বদ্ধতা থেকে সরে আসেননি। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ছিলেন সম্মুখসারিতে। তাঁর উদ্যোগে গড়ে ওঠে শ্রমিক ফেডারেশন ও পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন, যার মাধ্যমে বহু মানুষ সংগঠিত ও সচেতন হয়।
২০০২ সালে তিনি রাষ্ট্রের দায়িত্ব নেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে। একটি লোকসানী প্রতিষ্ঠানকে তিনি দক্ষতা, সততা ও দূরদর্শিতায় লাভজনক অবস্থানে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থেকেও তিনি প্রমাণ করেছেন, সফলতা আসে নিঃস্বার্থ কাজের মধ্য দিয়েই, প্রভাব নয়, নীতির শক্তিতে। তাঁর রাজনীতির দর্শন স্পষ্ট, উন্নয়ন মানে মানুষের জীবনকে ছুঁয়ে যাওয়া; বলেছেন মানুষের যাতায়াত, জীবিকা ও শিক্ষার সুযোগ বাড়ানোর কথা। তাঁর উদ্যোগে পাবনা থেকে ঢাকার যোগাযোগব্যবস্থায় এসেছে নতুন দিগন্ত। নৌপথ ও ফেরিঘাট সংস্কারে তাঁর ভূমিকা আজও আলোচিত।
১৯৯৯ সালে তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগ দেন। পরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতা, ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা মামলার মধ্যেও তিনি কখনো বিচ্যুত হননি তাঁর আনুগত্য ও বিশ্বাস থেকে। কঠিন সময়েও তিনি ছিলেন অটল, নীরবে, দৃঢ়তায়।
কিন্তু তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় শুধু রাজনীতিক নয়, মানবসেবক হিসেবেও। নিজের পরিবারের নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন “আলহাজ আহেদ আলী বিশ্বাস মানব কল্যাণ ট্রাস্ট”। দান করেছেন প্রায় ১১০ একর জমি, যাতে গড়ে উঠেছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, ঈদগাহ, কারিগরি কলেজ, পাঠাগার ও এতিমখানা। গৃহহীনদের জন্য নির্মাণ করেছেন হাজারো ঘর, স্বনির্ভরতার সুযোগ তৈরি করেছেন হাজারো মানুষের জন্য। এ পর্যন্ত ৩,৬০০টিরও বেশি গৃহহীন পরিবার পেয়েছে আশ্রয়, ৩,০০০-এরও বেশি মানুষ পেয়েছে কর্মসংস্থানের সুযোগ। তিনি ১১০টিরও বেশি মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণ করেছেন। এই ট্রাস্টের কাজ এখনো চলছে, আর এই চলমানতাই প্রমাণ করে, মানবসেবা তাঁর কাছে কোনো রাজনৈতিক প্রদর্শন নয়; বরং এটি তাঁর জীবনের ধর্ম।
ব্যক্তিজীবনে তিনি সহজ, সংযত ও অমায়িক। ধনী পরিবারের সন্তান হয়েও জীবনে আনয়ন করেছেন সরলতা। তাঁর ভাষা কোমল, কিন্তু অবস্থান দৃঢ়। মানুষের পাশে থাকা, তাদের কষ্টকে নিজের দায়িত্ব মনে করা, এই মানবিকতা তাঁকে আলাদা করে তোলে। আজ তিনি শুধু পাবনার নয়, বাংলাদেশের এক অনুপ্রেরণার নাম। অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বিশ্বাস করেন, রাজনীতি যদি সত্যিই মানুষের জন্য হয়, তবে তা সবচেয়ে পবিত্র পেশা হতে পারে। পরিবারের পরিমিত, শান্ত জীবনের মধ্যেও তিনি পেয়েছেন অবলম্বন ও অনুপ্রেরণা। সহধর্মিণী পারভীন আফরোজ তনু একজন গৃহিণী, যিনি নীরবে পাশে থেকেছেন প্রতিটি সাফল্য ও সংগ্রামে। তাঁদের দুই সন্তান, তানভীর রহমান মিথুন ও সাদ ফয়সাল রহমান নিপুণ নিজ নিজ পথে এগিয়ে চলেছেন। পিতা হিসেবে শিমুল বিশ্বাসের গর্ব কেবল তাঁদের সাফল্যে নয়, তাঁদের মধ্যে থাকা মানবিকতা ও নীতিবোধে।
অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস আজ শুধু একজন রাজনীতিক নন, তিনি একজন মানবিক চিন্তাশীল নেতা, সমাজসেবক ও পরিবর্তনের দূত। তাঁর জীবন ত্যাগ, সততা ও জনগণের সেবায় নিবেদিত এক আলোকিত অধ্যায়। তিনি প্রমাণ করেছেন - সত্যিকারের নেতার নেতৃত্ব ক্ষমতায় আরোহনের আগেই শুরু হয়; যার শেষ নেই কখনো, যতদিন মানুষের কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তাঁর নাম উচ্চারিত থাকে।